দাউদের চুলকানি খুবি মারাক্তক একটি রোগ। কারণ, শরীরে দীর্ঘদিন দাউদ ও চুলকানি থাকলে কিডনির সমস্যা হয়। তাছাড়া দাউদ একটি ছোয়াছে রোগ। দাউদে আক্রমণ ব্যাক্তির কাপড়-চোপড় অন্য কেউ পরলে তারও দাউদ হওয়ার সম্ভাবনা ৮০% থাকে। তাই দাউদ হলে অতি দ্রুত এর চিকিৎসা করতে হবে। যাতে বড় রুপ না নিতে পারেন।
দাউদ কিভাবে ভালো হয় ?
অনেকের মনে প্রশ্ন আসে দাউদ কিভাবে ভালো হয় ? আসলে আমরা সবাই জানি যে, দাউদ একটি রোগ, এটা ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে এবং মলম ব্যবহার করার মাধ্যমে ভালো হয়ে থাকে। তবে কোন প্রসেসে ভালো হয় সেটা কারো জানা নেই। দাউদ হয় মূলত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে। আর এই ব্যাকটেরিয়া ওষুধ ও মলমের মাধ্যমে দমন করার হয়। যখন ব্যাকটেরিয়া গুলো দমন হয়ে যায়। তখন দাউদ ভালো হয়ে যায়।
ব্যাকটেরিয়া দমন করার উদ্দেশ্য ওষুধ সেবন করলে ওষুধে থাকা উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ সিস্টেমকে হুকুম করে যে, শরীরের উপরি অংশে এই ব্যাকটেরিয়া আছে তাদেরকে ধ্বংস করো। তখন রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম সেই ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দাউদ ভালো করে ফেলে। আর মলম ব্যাবহার করলে সরাসরি মলমে থাকা উপাদান দাউদের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দাউদ ভালো করে ফেলে।
দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা
আপেল সিডার ভিনেগারঃ- একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, আপেল সিডার ভিনেগারের মধ্যে রয়েছে ফাঙ্গাসরোধী উপকরণ। যা দাউদের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে ম্যাজিকের মত কাজ করে। তাই দাউদে আক্রমণ ব্যাক্তি দিনের ৩ থেকে ৫ বার একটি তুলায় আপেল সিডার ভিনেগার নিয়ে সরাসরি দাউদের উপর লাগান। এভাবে ৩ দিন লাগালে ইনশাআল্লাহ আপনার দাউদ ভালো হয়ে যাবে।
নিমপাতার পেস্টঃ- নিমপাতা হলো যেকোনো ব্যাকটেরিয়া ও দাউদের শত্রু। তাই যারা দাউদের আক্রমণ হয়েছেন। তারা প্রতিদিন অন্তত তিনবার কয়েকটি নিমপাতা চিবিয়ে সরাসরি দাউদের উপর লাগিয়ে দিন এবং নিমপাতার রস শরীরে সাথে শুকিয়ে গেলে তুলে ফেলবেন। এভাবে ২ থেকে ৩ তিন দিন ব্যবহার করলে যেকোনো ব্যাকটেরিয়া ও দাউদ ভালো হয়ে যাবে।
আশা করি এই দুটি নিয়মের যেকোনো একটি নিয়ম টানা ৩ থেকে ৭ দিন পালন করতে পারলে আপনার নতুন বা পুরাতন সকল চুলকানি বা দাউদ পরিপূর্ণভাবে ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে আপনি যদি এগুলো করতে বিরক্তিকর মনে করেন, তাহলে ভালো কোন ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ বা দাউদের ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন।
দাউদের সবচেয়ে ভালো ঔষধ
বাজারে দাউদ ভালো করার অনেক ওষুধ ও মলম রয়েছে। তবে সব ওষুধ ভালো কাজ করে না। কিছু ওষুধ আছে কাজ করে, তাও আবার ধীরে ধীরে। তাই কমপক্ষে ৭ দিন সেবন করতে হয়। এজন্য বাছাই করে কিছু দাউদের সবচেয়ে ভালো ঔষধ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হলোঃ-
টার্বিনাফিন ২৫০ এমজিঃ- চিরস্থায়ী দাউদ ভালো করার জন্য টার্বিনাফিন ২৫০ এমজি ওষুধটি খুবই ভালো কাজ করে থাকে। তবে পরিপূর্ণ ফলাফল পেতে ওষুধটি ২ থেকে ৪ সাপ্তাহ সেবন করে যেতে হবে। সেবনের নিয়ম হলো দিনের ১ বেলা ১টি করে ট্যাবলেট খাওয়ার পর খেতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ইট্রাকোনাজোল ১০০ এমজিঃ- ইট্রাকোনাজোল ও খুব ভালো একটি ওষুধ। এটা টানা ১ থেকে ২ সাপ্তাহ সেবন করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন ১ বেলা ১ টি করে ট্যাবলেট খাওয়ার পর খাবেন। আর অপ্রাপ্তবয়স্করা ওষুধটি সেবন করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কারণ, সব ওষুধ অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সেবন যোগ্য না।
বাজারের দাউদের জন্য এই দুটি ওষুধের বেশি প্রচলন দেখা যায়। তবে দাউদ ভালো করার জন্য বাজারের আরো অনেক ওষুধ আছে। তবে এই ওষুধের গুগাগুন হলো এটি ট্যাবলেট ও ক্রিম দুটি ভেরিয়েন্ট আছে। আপনি ওষুধ সেবন করতে না চাইলে ক্রিম ব্যবহার করতে পারবেন। আর ওষুধের থেকে ক্রিম বেশি কাজ করে দাউদ ভালো করার ক্ষেত্রে।
দাউদের এন্টিবায়োটিক ওষুধ
দাউদের চিকিৎসা দুইভাবে করা হয়। মলম ব্যবহারের মাধ্যমে এবং ওষুধ সেবনের মাধ্যমে। কিন্তু ওষুধ সেবন করে দাউদ পরিপূর্ণ ভালো করতে প্রায় ১ থেকে ৩ সাপ্তাহ সময় লেগে যায়। আর মলম ব্যবহার করে দাউদ ভালো করতে সর্বোচ্চ ১ সাপ্তাহ সময় লাগে। তাই আমি মনে করি দাউদ ভালো করতে দাউদের এন্টিবায়োটিক ওষুধ না খাওয়ায় উত্তম। তারপরও নিচের কিছু দাউদের এন্টিবায়োটিক ওষুধ এর মা দেওয়া হলোঃ-
- অমোস্টিন
- ফুলুগাল (Flugal)
- কানামাইসিন
- নেটিলমাইসিন
- প্যারোমোমাইসিন
- অ্যামিকাসিন
- হেরবিমাইসিন
- জেলডানামাইসিন
- এরটাপেনেম
- ইমিপেনেম/সিলাস্টাটিন
- মেরোপেনেম
উপরে সবগুলো দাউদের এন্টিবায়োটিক ওষুধ। তবে আমি আপনাকে সাজেস্ট করবো “ফুলুগাল (Flugal)” ওষুধটি সেবন করার জন্য। কারণ, ফউলুগাল ওষুধটি প্রায় ডাক্তারা দাউদের রোগীদের পেস্ক্রিপশন করে থাকে এবং এটি খুবই কার্যকর ওষুধ। দিনের ১ টা করে ৭ দিন খেলে যেকোনো দাউদ ইনশাআল্লাহ ভালো হয়ে যাবে।
দাউদের সবচেয়ে ভালো ঔষধ ও মলম এর নাম জেনে নিন।
দাউদ ও চুলকানি এই দুটি রোগ খুবই যন্ত্রণাদায়ক। যার হয় সে বুঝে। একটু শান্তিতে বসে থাকা যায় না দাউদ হলে। একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যদি কারো শরীরে দাউদ বা অন্যকোনো চর্ম রোগ দীর্ঘদিন থাকে। তাহলে তার কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দাউদ হলে যত দ্রুত সম্ভব এর চিকিৎসা করতে হবে। নিচে ১০০% পরিক্ষিত ৩ দিনে পরিপূর্ণভাবে দাউদ ভালো করার ওষুধের নাম দেওয়া হলোঃ-
Ring Guard: দাউদ ভালো করার যত ওষুধ আছে, তারমধ্যে সবচেয়ে ভালো ওষুধের নাম হলো ” রিং গার্ড- Ring Guard ” এটা হলো একটি ইন্ডিয়ান কোম্পানির মলম ওষুধ। যেকোনো বড় ফার্মেসীতে ওষুধটি পেয়ে যাবেন। ওষুধটি প্রতিদিন তিন বেলা সামান্য মলম নিয়ে দাউদে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিলে ৩ দিনের মধ্যে আপনার নতুন পুরাতন সকল দাউদ ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
Sporagin: এটা হলো মুখদিয়ে সেবন করে দাউদ ভালো করার IBN SINA কোম্পানির ওষুধ। Sporagin ওষুধ ও Ring Guard মলমের মধ্যে পার্থক্য হলো Ring Guard যেখানে ব্যবহার করবেন সেখানকার দাউদ ভালো হবে। কিন্তু ফফ ওষুধটি সেবন করলে শরীরের যেখানে দাউদ থাকুক না কেনো সব স্থানের দাউদ ভালো হয়ে যাবে। তবে ফফ ওষুধটি এন্টিবায়োটিক, তাই এর পার্শ্বপতিক্রিয়া থাকতে পারে। কিন্তু Ring Guard এর কোনো পার্শ্বপতিক্রিয়া নেই।
Ring Guard মলমটির দাম Sporagin এর থেকে একটু বেশি হতে পারে। তবে ১০০ থেকে ১৩০ টাকার বেশি হবে না। কারণ, অন্যান্য দাউদের ওষুধ ব্যবহার করলে অনেক দাদের স্থানে অনেক জালা-পোড়া করে। কিন্তু এই Ring Guard ওষুধটি অনেক ঠান্ডা। তাই লাগালে অনেক আরাম পাওয়া যায়। ফলে এই ওষুধটি ছোট বাচ্ছাদের শরীরে দাউদ হলেও ব্যবহার করতে পারবেন।